Monday, September 14, 2020

লজেন্স ! হাসায়- কাঁদায়

        


উপরে শক্ত আবরণ যুক্ত রং বে রং এর ছোট্ট মিষ্টি সুস্বাদু  একপ্রকার খাবারই লজেন্স। বাচ্চা-বুড়ো সকলের কাছেই এর সমান গ্রহনযোগ্যতা। ছোট্ট এই খাবারটির স্বাদ নেন নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না।  বাচ্চাদের বায়না ভোলানো থেকে বয়স্কদের অবসর সময় কাটানোয় লজেন্সের ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের সমাজে ক্যাণ্ডি , ট্রফি নানা নামে পরিচিত লজেন্স। 

লজেন্স শক্ত এক প্রকার মিষ্টি। যা চুষে বা চিবিয়ে খেলে ভিতরে নরম। যেটা চিনি এবং মাখন একসাথে সেদ্ধ করে তৈরি হয়। বিভিন্ন রকম  স্বাদের জন্য এর সাথে অন্যান্য রং বা গন্ধজাত দ্রব্য মিশ্রণ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে কাজু বাদাম বা নারকেলও মিশ্রণ করা হয় আরও সুস্বাদের জন্য। লজেন্স সবচেয়ে জনপ্রিয় যাদের কাছে সেই শিশুদের কথা মাথায় রেখেই দিন দিন বদলাচ্ছে লজেন্সের স্বাদ-বর্ণ-গন্ধ। আরও আকর্ষনীয় করার জন্য বদলাচ্ছে আকারও। বাবা মায়ের কাছে বায়না ভোলানোর সহজ ও আদি উপায় এই লজেন্স। যা মূহুর্তের মধ্যে বাচ্চার কান্না থামিয়ে দেয়। মাছ লজেন্স, কাঠি লজেন্স, টিকটিকি লজেন্স একসময় বাচ্চাদের কাছে খুবই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। যদিও অতীত দিনের সেই সব লজেন্স আজ আর দেখা যায় না। এসবের জায়গায় এসেছে নামিদামী কোম্পানির ক্যাটবেরী। 


স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, বড়দিন প্রভৃতি দিনে স্কুল বা ক্লাবের থেকে পাওয়া একটি লজেন্স আজও শিশু মনে আনন্দ দেয়। ট্রেনে বসে অবসর সময় কাটাতে লজেন্সের জুরি মেলা ভার। ঠাণ্ডা লেগে গলার অস্বস্থি কাটাতেও লজেন্স খুবই উপকারি। লজেন্স যেমন আনন্দ দেয় , খুশিতে রাখে, একাকিত্ব ভোলায় , আবার এই লজেন্সই মানুষকে কাঁদায়। সারা জীবনের জন্য চোখে জল এনে দেয় এই লজেন্স।এই লজেন্সই জীবনে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। খবরের কাগজ খুললেই চোখে পড়ে ‘ লজেন্সের লোভ দেখিয়ে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা’। কিংবা ‘লজেন্সের লোভ দেখিয়ে নাবালিকাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে খুন করল প্রতিবেশী যুবক’। লজেন্স সারা জীবন এই নির্যাতিতা মানুষ ও তাদের পরিবারকে কাঁদায়। লজেন্সের নাম শুনলেই আঁতকে ওঠেন নির্যাতিতার মা। ট্রেনে সহকর্মীর কাছ থেকে লজেন্স খেয়ে বেঁহুশ হয়ে অনেকের সর্বস্ব খোয়া গিয়েছে। লজেন্স তাদের জীবনেও অভিশাপ।


---- কুন্তল পাল 

0 comments:

Post a Comment