শিল কাটাবে শিল... ,শিল কাটাবে শিল...।একটা সময় গ্রাম বাংলা এমন কি শহরের পাড়ায় পাড়ায় এই হাঁক শোনা যেত । হাতে ছোট একটা ব্যাগ নিয়ে ঘুরে ঘুরে বাড়িতে বাড়িতে শিল নোড়া কাটিয়ে জিবিকা অর্জন করতেন অনেকেই। দিনের শেষে যা আয় হত তা দিয়ে ভালভাবেই চলে যেত সংসার ।গৃহস্থের রান্না ঘরে মশলা বাটতে বাটতে মসৃণ হয়ে যাওয়া শিল নোড়া ফিরে পেত তার নতুন চেহারা। মশলা পেশায় করতেও কষ্ট কম হত। কিন্তু শিল নোড়া কাটানোর লোক আজ আর দেখা মেলে না। গ্রামবাংলাতেও মেলানো ভার। শক্ত পাথরের বুকে যারা খোদাই করে ফুটিয়ে তুলত শিল্প গৃহস্থের রান্না ঘরে তাদের প্রয়োজন ফুরিয়েছে ।মানুষ বেশি করে যন্ত্র নির্ভর হয়ে পরেছে। মিক্সি মেশিনের যথেচ্ছ ব্যবহার এর ফলে গৃহস্থের রান্না ঘর থেকে শিল নোড়া প্রায় বিদায় নিয়েছে।বিদায়ের পথে শিল নোড়া কাটানো পেশাও।
শক্ত পাথরের বুকে খোদাই করে সহজেই ছবি এঁকে দিতেন যারা , কাজটা কিন্তু অতটা সহজ ছিল না। তবুও পেশার তাগিদে অবলীলায় কাজটি করে যেতেন। কখনও মাছ, কখনও ফুল-ফল , কখনও পাখির ছবি ফুটে উঠত পাথরের শিলনোড়ায় ।ছোট একটা শেনি আর হাতুড়ি ছিল এদের কাজের হাতিয়ার । দীর্ঘদিন মশলা পেষার ঝাঁজ ও পাথরের গুঁড়োর হাত থেকে চোখ ও মুখকে রক্ষা করার জন্য কাপড়ের টুকরো ও চশমা ব্যবহার করতেন এরা । বর্তমান প্রজন্ম অনেকেই এই পেশা সম্পর্কে জানে না । আগামী প্রজন্ম হইতো জানবেই না এই পেশা সম্পর্কে ।
-- কুন্তল পাল
0 comments:
Post a Comment